ঘাড়ে ব্যথা হলে কি করবেন

ঘাড়ে ব্যথা একটি অতি সাধারণ সমস্যা, যা হঠাৎ করে হতে পারে বা দীর্ঘদিন ধরে স্থায়ীও হতে পারে। সাধারণত ঘুমের ভুল ভঙ্গি, দীর্ঘ সময় ধরে মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহার, পেশীতে টান পড়া কিংবা বাতজ্বরের কারণে ঘাড়ে ব্যথা দেখা দেয়। কখনো কখনো এটি মাথাব্যথা, কাঁধে ব্যথা বা হাত অবশ হয়ে যাওয়ার কারণও হতে পারে। তবে কিছু সহজ উপায় মেনে চললে প্রাথমিকভাবে এই ব্যথা থেকে আরাম পাওয়া যায়।

খারাপ স্বপ্ন দেখার প্রতিক্রিয়া

ঘাড়ে ব্যথা শুরু হলে প্রথমেই একে বিশ্রাম দিন। ব্যথার জায়গা ঘন ঘন না নাড়ানোই ভালো। আপনি চাইলে ব্যথার জায়গায় হালকা গরম সেঁক দিতে পারেন—একটি গরম তোয়ালে ব্যবহার করে দিনে দুই-তিনবার সেঁক দিলে পেশী শিথিল হয় এবং ব্যথা কমে। তবে যদি ব্যথার স্থান ফুলে যায় বা প্রদাহ থাকে, তাহলে গরম সেঁকের পরিবর্তে ঠাণ্ডা বরফ ব্যবহার করাই উপকারী।

ঘাড় সোজা রেখে বসা ও চলাফেরা করা এই সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। মোবাইল বা ল্যাপটপ ব্যবহারের সময় চোখের সমান্তরালে স্ক্রিন রাখুন, এবং একটানা অনেকক্ষণ নিচের দিকে তাকিয়ে না থাকুন। অনেকেই দীর্ঘক্ষণ এক ভঙ্গিতে বসে কাজ করেন, যা ঘাড়ে চাপ সৃষ্টি করে। প্রতি ঘণ্টায় ২-৩ মিনিট করে উঠে দাঁড়িয়ে ঘাড় ঘোরানো বা হালকা স্ট্রেচিং করলে অনেকটাই স্বস্তি মেলে।

ঘাড়ে ব্যথা কমাতে কিছু হালকা ব্যায়ামও সহায়ক হতে পারে। তবে ব্যথা তীব্র হলে ব্যায়াম না করাই ভালো। ঘাড় ডানে-বাঁয়ে ধীরে ধীরে ঘোরানো, কাঁধ ওপরে তোলা ও নামানো এবং ঘাড় সামনের দিকে নামিয়ে রাখার মতো ব্যায়ামগুলো পেশীকে নমনীয় রাখে এবং ব্যথা প্রতিরোধে সাহায্য করে। কিন্তু ব্যথা বাড়তে থাকলে সাথে সাথে ব্যায়াম বন্ধ করতে হবে।

আপনি চাইলে পেইন রিলিফ ক্রিম বা জেল ঘাড়ে ব্যবহার করতে পারেন, যা অস্থায়ী স্বস্তি দিতে পারে। তবে এটি যেন খুব বেশি গরম বা তীব্র প্রভাব ফেলে এমন না হয়, সেদিকে সতর্ক থাকতে হবে। যদি ব্যথা ২-৩ দিনের মধ্যে কমে না, কিংবা সঙ্গে হাত অবশ হওয়া, ঝিঁঝি ধরার মতো উপসর্গ দেখা দেয়, তাহলে দেরি না করে একজন চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করা উচিত।

প্রতিদিন ঘুমানোর সময় সঠিক ধরনের বালিশ ব্যবহার করা উচিত। খুব উঁচু বা খুব নিচু বালিশ ঘাড়ের গঠনে সমস্যা সৃষ্টি করে। মেডিকেল-গ্রেড বালিশ বা অর্গোনমিক বালিশ ব্যবহার করলে ঘাড়ে চাপ কম পড়ে এবং ঘুমের সময় সঠিক ভঙ্গি বজায় থাকে, যা ব্যথা প্রতিরোধে কার্যকর।

মনে রাখবেন, ঘাড়ের সামান্য ব্যথাও বড় সমস্যা তৈরি করতে পারে যদি তা অবহেলা করা হয়। তাই প্রাথমিক অবস্থাতেই যত্ন নিন এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। সুস্থ ঘাড় মানেই দৈনন্দিন কাজকর্মে স্বাচ্ছন্দ্য ও আনন্দ।

আপনার স্বাস্থ্যের জন্য